ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের নেতাদের গভীর শোক প্রকাশ:
দক্ষিণ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৪৯ মুসল্লিকে হত্যা করেছে ব্রেনটন ট্যারেন্ট নামে অস্ট্রেলিয়ার এক ইসলাম বিদ্বেষী সন্ত্রাসী। এদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশী নাগরিক রয়েছেন। আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার সময় মসজিদের ভেতর থেকে সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করে ওই সন্ত্রাসী। শুক্রবার জুমার নামাজ চলার সময় এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত এক নারীসহ চার ব্যক্তিকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। আটকের সময় তাদের একজন সুইসাইড ভেস্ট পরা অবস্থায় ছিল। হত্যাকাণ্ড ঘটনার আগে টুইটারে ৭৩ পাতার ইশতেহার আপলোড করে হামলাকারী। এ ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা শোক প্রকাশ করেছেন ও নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে মুসলমানরা গণহত্যার শিকার হচ্ছেন জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুতা অলসভাবে দেখছে বিশ্ব। এই মুসলমানদের যে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করা হত, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সীমান্ত ছাড়িয়ে তা গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, এখনই যদি পদক্ষেপ নেয়া না হয়, তবে আমাদের আরো বিপর্যয়ের খবর শুনতে হবে। আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই নিহতদের ক্ষমা করে দেবেন। আহতদের দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এ হামলার ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে নিউজিল্যান্ডের হতাহত নাগরিকদের প্রতি আমি শোক জানাচ্ছি। ইসলামবিদ্বেষ ও বর্ণবাদ বৃদ্ধির সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হিসেবে এ ঘটনাকে দাঁড় করিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের এ নেতা।
এর আগে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ কখনো ধর্ম হতে পারে না। নিহত ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেটিনো মারসুদি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সরকার ও ইন্দোনেশিয়ার জনগণ হামলার শিকার ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।’
অস্ট্রেলিয়ার নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে নিয়োজিত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত ওয়াহিদুল্লাহ ওয়াসি টুইটারে একজন আফগান বংশোদ্ভূত নিহত ও তিনজন আফগান আহত হয়েছেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে গুলির ভয়ানক খবর পেয়েছি। আমি নিহত আফগানের পরিবার ও আহত তিনজনকে নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’
অস্ট্রেলিয়া এই দুঃখজনক হামলার পরে নিউজিল্যান্ডের পাশে আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা পাশে আছি এবং শোক প্রকাশ করছি। অবশ্যই এটি একটি চরমপন্থী, ডানপন্থী, সহিংস সন্ত্রাসী দ্বারা সংঘটিত আক্রমণ।’ তিনি মিডিয়াকে নিশ্চিত করেছেন যে, দক্ষিণ নিউজিল্যান্ড শহরের ক্রাইস্টচার্চ শহরের প্রধান মসজিদে হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণকারী নাগরিক।

