ময়মনসিংহ নগরীর ত্রিশাল সড়কে ট্রাকচাপায় ভূমিষ্ঠ হওয়া সেই শিশুর দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক।
শনিবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নবজাতককে দেখতে গিয়ে চিকিৎসা ও পরবর্তী ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তিনি। এ সময় তিনি নবজাতকটির চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব ও ভবিষ্যতে যেন তার কোন সমস্যা না হয় সেজন্য তার নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৭ জুলাই) বিকেলে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে চিকিৎসাধীন এই শিশুর সব দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ত্রিশালের এক ব্যবসায়ী। তবে তিনি তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
বর্তমানে শিশুটি ময়মনসিংহের লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে জানিয়ে ওই হাসপাতালের পরিচালক মো. শাহজাহান জানান, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন এবং ত্রিশালের একজন ব্যবসায়ী নিয়মিত শিশুটির খোঁজ খবর রাখছেন। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ আছে।
তিনি আরও বলেন, নবজাতকের পাশের বেডে ভর্তি থাকা এক প্রসূতি মা ওই নবজাতককে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। এতে বাচ্চাটির বুকের দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আশা করছি সে দ্রুতই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।
হাসপাতালের নার্স সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, শনিবার রাতে এক প্রসূতি তার বুকের দুধ দিয়েছিলেন। আজ তার ছুটি হয়ে গেছে। পরে নাছিমা বেগম নামে আরেক প্রসূতি তিন বার দুধ দিয়েছেন। আজ তারও ছুটি হয়ে যাবে। তবে হাসপাতালে আরও প্রসূতি আছেন। তারা স্বেচ্ছায় ওই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য রাজি আছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০), মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্টাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পরে পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না বেগম মারা যান এবং ঘটনাস্থলেই রত্না বেগম সন্তান প্রসব করেন।
পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতক বাচ্চাটিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিনিটি বেজড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করেন। বাচ্চাটি বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন।
এদিকে নবজাতক ছাড়াও নিহত জাহাঙ্গীর-রত্না দম্পতির এক ছেলে আর এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে জান্নাত (১০) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়লেও ছেলে এবাদত (৭) স্কুলে যায় না।
ভিডিওতে দেখুন আরোঃ https://www.youtube.com/watch?v=iZFfX6z53sM


0 Comments