ফাঁসি হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী আদনান মেন্দেরেসকে স্বরণীয় ও বরণীয় উদ্যেগ তুরষ্কের
তুরস্কে কামালিজমের একদলীয় শাসনের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন আদনান মেন্দেরেস। বহুদলীয় গণতন্ত্র তার হাত দিয়ে প্রতিষ্টা। আজানকে আরবীতে পুন:প্রচলন করেছিলেন, দিয়েছিলেন ধর্ম-কর্ম পালনের স্বাধীনতা যা একদলীয় সিএইচপি সরকার রদ করেছিল। কিন্তু ভালো মানুষের কি ঠাই আছে? সেক্যুলার সেনাবাহিনী ক্যু করে তাকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে কামালিস্ট স্টাবলিশমেন্টের (বিচার বিভাগ, সিভিল সোসাইটি) সহায়তায় ক্যাঙ্গারু ট্রাইবুনালের মাধ্যমে তার ফাঁসির আয়োজন করেছিল।
![]() |
| দ্বীপ |
সেই ট্রাইবুনাল বসেছিল ইস্তান্বুলের অন্তর্গত মারমারা সাগরের জনমানবহীন এক ছোট্র দ্বীপে যেখানে তার ফাঁসিও হয়েছিল যাতে জনগনের সিম্পেথিও না পেতে পারে! সেটা ১৯৬০-৬১ সাল, স্বভাবতই তখন রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ছাড়া তেমন কোন মিডিয়া থাকার কথা নয়, সোসাল মিডিয়াতো নাই.... তাতে জনগন মেন্দেরেসের ব্যাপারে অন্ধকারেই ছিল। যাক, এভাবে ফাঁসি দিয়ে মেন্দেরেসের জীবন থামিয়ে দেওয়া গেলেও তার আদর্শকে থামানো যায়নি। ডান ও ইসলমিস্টরাই তুরস্ককে ডোমিনেন্ট করছে। আজকের তুরস্কে মেন্দেরেস অন্যতম আইডল।
![]() |
| আদনান মেন্দেরেসকে |
মেন্দেরেসের ফাঁসি হওয়া দ্বীপকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরে তাকে স্বরণীয় ও বরণীয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক সরকার। ২০১৩ সালে কাজ শুরু হওয়া সেই প্রজেক্টের কাজ একদম শেষ পর্যায়ে। তাতে থাকছে একটি মসজিদ (হুম, সেখানে আরবীতেই আজান হবে), একটি স্মৃতিস্তম্ভ, ৬০০ অতিথির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, মিউজিয়াম, হোটেলসহ নানা নির্মাণ। আর দ্বীপের নাম পরিবর্তন হয়ে 'গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা দ্বীপ' (Democracy and Freedom Island) হচ্ছে।
![]() |
| প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান |
আজকে সেই ক্যুয়ের বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষে গতকাল প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সেই দ্বীপ সফর করে নির্মান কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন। তার এক বক্তব্য আমার মনে ধরেছে; "আমরা এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোর আয়োজন করবো তাতে অংশগ্রহণকারীরা এই কালো ফাঁসি ও আদনান মেন্দেরেস সম্পর্কে খুব কাছ থেকে জানতে পারবে, জানতে পারবে সিএইচপির অতীত মস্তিষ্ক সম্পর্কেও"। আসলেই কি অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়ে কাউকে রুখা যায়? নাকি তাকে আরো স্বরণীয় করে তুলেন রাব্বুল আলামিন। (খবরঃ হাফিজুর রহমান)



